এই নিয়ে পাঁচবার বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন বেগম জিয়া

দীর্ঘ ১০ বছর ধরে চলা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার প্রধান আসামি হিসেবে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে যেতে হলো আজ বৃহস্পতিবার। তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগে রাজনৈতিক কারণে আরও চারবার বন্দি জীবন কাটিয়েছেন তিন-তিনবারের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
গত শতকের ৮০ এর দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর গ্রেপ্তার হতে হয় খালেদা জিয়াকে। প্রতিবারই তাকে সেনানিবাসের শহীদ মইনুল সড়কের বাড়িটিতে দীর্ঘদিনের জন্য গৃহবন্দি রাখা হয়।
সর্বশেষ জরুরি অবস্থার সময় সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন খালেদা জিয়া। সেদিন ভোরে খালেদাকে ক্যান্টনমেন্টের মইনুল রোডের বাসভবন থেকে গ্রেফতারের পর সোজা নিয়ে যাওয়া হয় সিএমএম আদালতে। আদালতে জামিন না মঞ্জুর হলে তাকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় স্থাপিত সাব জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কারাগারে ৩৭২ দিন কাটানোর পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তিনি মুক্তি পান।
সাব জেলে থাকার সময় প্রথম পালিত হয় রোজার ঈদ, ২০০৭ সালের ১৪ অক্টোবর।  ওই দিন সাব জেলের নিয়মিত রুটিনের মতোই জেল জীবনের প্রথম ঈদের দিনটিও শুরু হয়েছিল। তার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোও তখন জেলে ছিলেন। এরপর ২০০৭ সালের ২১ ডিসেম্বর কোরবানির ঈদও ওই সাবজেলেই পালন করেন। সাব জেলে থাকার সময় ২০০৮ সালের ১৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার মা বেগম তৈয়বা মজুমদার দিনাজপুরে নিজ বাসভবনে মারা যান। তার লাশ হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। পরদিন  (১৯ জানুয়ারি)  খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মইনুল রোডের বাসায় গিয়ে মায়ের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
কারাগারে খালেদা জিয়ার ঈদ কাটানোর বিষয়ে জানতে চাইলে ওই সময়ের জিআইজি প্রিজন ও বর্তমানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ওই সময় সাব জেলে ছিলেন। তিনি নিয়মিত নামাজ পড়তেন। ইবাদত করতেন। ঈদের দিনের শুরুটাও তাঁর ইবাদতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল। ঈদের দিন অন্য বন্দিদের যে খাবার দেওয়া হয়, কারাগারের পক্ষ থেকে তাঁকেও সেই খাবার দেওয়া হয়। তবে, তাদের আত্মীয়-স্বজনদের ঈদের দিন দেখা করতে দেওয়া হয়েছিল। তারা খাবারও নিয়ে এসেছিলেন। তিনি সেই খাবারের সামান্য কিছু নিজের জন্য রেখে বাকিটা কারারক্ষীদের দিয়ে দিয়েছিলেন।’

No comments

Powered by Blogger.