প্রশ্নপত্র ফাঁস: সংসদে শিক্ষামন্ত্রীকে অপসারণ দাবি

প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম বন্ধের পরিবর্তে উৎসাহিত করার দায়ে সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর অপসারণ দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিরোধী দলীয় এমপি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তিনি বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর উচিত ছিল নিজের ব্যর্থতার কথা শিকার করে পদত্যাগ করা। 
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ তাকে সরিয়ে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ দিন। মন্ত্রী যেখানে ঘুষ খেতে উৎসাহিত করছেন, তাহলে কিভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ন্ত্রণ করবেন, এটা আমার বোধদয় হয় না। তাই অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রী তার ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অনিয়ম স্বীকার করে নিয়ে পদত্যাগ করুন। আর তিনি তা না করলে তাকে বরখাস্ত করে শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 
আজ জাতীয় সংসদ শীতকালীন অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে এসব কথা বলেন বিরোধী দলের এই নেতা। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে উপস্থিত ছিলেন। তার বক্তব্যের পর বৈঠকের সভাপতি ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, নিশ্চিয়ই প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি শুনেছেন। তিনি তার বিবেক বিচেনায় জাতির স্বার্থে যতটুক করার প্রয়োজন অবশ্যই তিনি করবেন।
সাবেক এই শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ছোট কালে আমি পড়েছিলাম নলেজ ইজ পাওয়ার।  জ্ঞানই শক্তি। জ্ঞান তখনই শক্তি হয় যখন সত্যিকারে শিক্ষা নিয়ে শিক্ষিত হবে। অনেক জিপিএ ফাইভ পেয়ে আমার কাছে অনেকে চাকরির জন্য এসেছে তারা বাংলা –ইংরেজিতে দরখাস্ত লিখতে পারেনা।  এটা হচ্ছে বর্তমান অবস্থা।
জাতীয় পার্টির সাবেক এই মহাসচিব বলেন, আগামি প্রজন্মকে যদি সত্যিকার শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারি, আর শুধু সনদ বিক্রির জন্য যদি শিক্ষিত করি তাহলে তো কিছুই শিখবে না। এই শিক্ষা অর্থহীন। আমরা আগামীতে কাদের হাতে দেশটা দিয়ে যাব। শিক্ষিত সমাজ ছাড়া সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারব না। আমরা চাই সত্যিকার শিক্ষা। প্রধানমন্ত্রী চান জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, আমরাও চাই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ। 
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনেক উন্নয়ন কর্মকান্ড হয়েছে, হচ্ছে। বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই কয়েক বছরে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে। কিন্তু কয়েকদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা অধিদপ্তরের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আপনারা ঘুষ খান সহনীয় পর্যায়ে। তিনি এও বলেছেন আমিও ঘুষ খাই, অন্য মন্ত্রীরাও ঘুষ খান। এটা বলার পরে উনি মন্ত্রী হিসেবে থাকতে পারেন না। আর একজন মন্ত্রী একথা বলতে পারেন? এটা যখন ছাত্ররা শুনবে মন্ত্রী বলছেন সহনীয় পর্যায়ে ঘুষ খেতে তাহলে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাবেন কিভাবে? 
জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, যে মন্ত্রী ঘুষ সহনীয় মাত্রায় খেতে বলেন, সেই মন্ত্রীর কথা তো কেউ শুনবেই না। তার সচিব শুনবেন না, অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা শুনবেন না। কেউ শুনবেন না। তাই প্রশ্ন ফাঁস আজ মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করছে। এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বলা হয়েছিল যে প্রশ্ন ফাঁস ধরিয়ে দিতে পারলে তাকে ৫ লাখ টাকা পুরস্কৃত করা হবে। অথচ আজ তুষার শুভ্র নামে একটা সামাজিক মাধ্যমে দেখলাম, বলা হয়েছে, ইংরেজি প্রশ্ন আছে, সংগ্রহ করতে হলে এত টাকা লাগবে? 

No comments

Powered by Blogger.